মজার তথ্যঃ আপনি জানেন কি কেন আমরা নিজেদের সুড়সুড়ি দিতে পারি না ?? !!!!

আমার ছোট্ট একটা ভাগ্নে আছে । তার সাথে প্রায়ই কাতুকুতি খেলি । হঠাত সে একদিন প্রশ্ন করে বসল “ আচ্ছা মামা ! আমরা কেন নিজেদের কাতুকুতি দিতে পারিনা ?” প্রশ্ন শুনেতো আমি হতভম্ব । হকচকিয়ে গেলাম—কারণ উত্তরতো আমারো জানা নাই । সে মনে হয় আমার মনের অবস্থা জেনে ফিক করে হেসে বলল “আমি জানি “ আমি ব্যগ্র কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম “কেনো “কেনো “কেনো মামা?” উত্তর দিল “ কারণ আমাদের বগল আমাদের হাতকে চিনে '' , উত্তর শুনে আমার “হাসব না কাঁদবো” অবস্থা ।







যাই হোক --- শেষে অনেক ঘাটাঘাটি করে মজার উত্তর পেলাম -------------------------



এক কথায় ভাষায় উত্তরটি হল –যখন আমরা নিজেদের কাতুকুতি দেই তখন আমরা আগাম বুঝতে পারি ফলে অনুভূতি তেমন হয় না । কিন্তু বাহ্যিক বা পারিপার্শ্বিক থেকে সুড়সুড়ি আসলে তা আমরা আগাম বুঝলে পারিনা । আর বুঝলেও জানতে পারিনা যে তার মাত্রা কদ্দুর হতে পারে ।

আসলে আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে সোমাটোসেন্সরি কর্টেক্স নামে একটা এলাকা আছে । ফাংশন ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজ এর মাধ্যমে ওই এলাকার কার্যক্রম দেখা যায় । গবেষনায় দেখা গেছে যে ওই এলাকা ব্যাক্তিগত বা অভ্যন্তরিন সুড়সুড়ি আর বাহ্যিক সুড়সুড়ির প্রতি একই কার্যকরিতা দেখায় না।



আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত বাহ্যিক পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা –অনুভুতি গ্রহন করছে এবং তদানুযায়ী প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করছে । আর আমাদের মস্তিষ্কের সেন্সরি সিস্টেমের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন দিকই হচ্ছে যে , বাহ্যিক পরিবেশ থেকে গৃহিত উদ্দীপনা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখানো । যেমন মশা কামড়ালে আমরা চড় না দিয়ে পারিনা । :):) তাই মস্তিষ্ক বাহ্যিক সকল অনুভুতিগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে ১) নিজ কর্তৃক সৃষ্ট ২) বাহ্যিক কর্তৃক সৃষ্ট । সেই অনুযায়ী মস্তিষ্কের সোমাটোসেন্সরি অঞ্চল বাহ্যিক উদ্দীপনাগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেয় । নিজ কর্তৃক সৃষ্ট উদ্দীপনা কম প্রাধান্য পায় ।



গবেষনায় দেখা গেছে , আমাদের মস্তিষ্কের পেছন দিকে সেরেবেলাম নামে একটি অংশ আছে যা কিনা শরীর কর্তৃক নাড়াচাড়া নিয়ন্ত্রন করে । সেরেবেলামের সকল স্নায়ুকোষ নিয়েই কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত ।যখন আপনি নিজেকে সুড়সুড়ি দেয়ার চেষ্টা করবেন তখন সেরেবেলাম আগে থেকেই আপনার অঙ্গের নড়াচাড়া বুঝতে পারে এবং মস্তিষ্কে উদ্দীপনা সৃষ্টা করে না , আর করলেও কম । আর অন্য কেউ সুড়সুড়ি দিলে সেরেবেলাম তা আগে থেকে বুঝতে পারেনা (যেহেতু আপনার নিজের অংগ দিয়ে কাজটি করছেন না ) , ফলে সোমাটোসেন্সরি এলাকায় তীব্র উদ্দীপনা প্রেরণ করে। ফলে আপনিও অনুভব করেন তীব্র কাতুকুতি ।


তাই বলে কি আমরা আমাদের কখনই সুড়সুড়ি দিতে পারবনা ।/:) /:) উত্তর হচ্ছে না । তবে গবেষনায় দেখা গেছে যে মজার কাহিনী । স্কাইজফ্রেনিয়া নামক একটি রোগ আছে । আর যারা স্কাইজফ্রেনিক তারা নিজেরাই নিজেদের কাতুকুতি দিতে পারেন । কারন তাদের মস্তিষ্ক স্ব-উদ্দীপনা কে চিনতে পারে না এবং তা বাহ্যিক উদ্দীপনা হিসেবেই ধরে নেয় । যদিও তারা নিজে অঙ্গের নাড়াচাড়া বুঝতে পারে কিন্তু মস্তিষ্কের সেরেবেলাম আর সোমাটোসেন্সরি মাঝে যোগাযোগের অসামঞ্জস্যতা হয় । ফলে অযাচিত ফল হিসেবে কাতুকুতি অনুভব করেন ।

যাই হোক … নিজেদের আমরা সুড়সুড়ি দিতে না পারায় দুঃখের কিছু নেই ।:D :) বরং সুড়সুড়িকে পাই বলে ,সহজেই আমরা অনুভুতি থেকে বুঝতে পারি কোনটা আসলেই ক্ষতিকর আর কোনটা না।যেমন গা বেয়ে কোনো বিষাক্ত পোকামাকড় উঠলে আমরা হাত-পা নাড়াচাড়া করে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করি ।

তবে ভাগ্নের নেক্সট প্রশ্নের উত্তর বের করতে আমার গলদ্ঘর্ম অবস্থা । প্রশ্নটা হচ্ছে এমন যে, গরু কোরবানি দেয়ার পর গোশত কাটাকুটি করার সময় অনেক সময় দেখা জায় যে , গোশতের কিচু কিচু অংশ কাঁপতে থাকে । কিন্তু কেন ??কারন , কোষগুলো তখনো জীবিত থাকে ... আমার ধারনা।  সঠিক কারণটা জানতে পারছিনা । কেউ জানলে কষ্ট করে জানান ।:(( :(( :((

1 comments:

  1. Anonymous said...:

    বেশ মজার তো!!!!!!!!!!!!!!!!!! আরও শেয়ার করেন ভাই ... প্লিজজজজ

Post a Comment

Search

Blog Archive

Popular Posts

Followers

Social Icons

Featured Posts